Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
নতুন চরে বসত গড়ার সংগ্রাম, কোথাও ঘন কাশবন, কোথাও হালকা, কোথাও শুধু ঘাস, কোথাও জমে আছে সামান্য পানি
বিস্তারিত

কোথাও ঘন কাশবন, কোথাও হালকা, কোথাও শুধু ঘাস, কোথাও জমে আছে সামান্য পানি। এর মধ্যে নৌকা থেকে ঘরের চালা মাথায় নিয়ে নামছেন স্বামী-স্ত্রী। আবার স্বামী খুঁটি পোঁতার জন্য মাটি খুঁড়ছেন, স্ত্রী গর্ত থেকে মাটি তুলছেন। আরেক জায়গায় নারী ও শিশুরা খোন্তা-কোদাল-বাঁশ নিয়ে কর্মব্যস্ত। এভাবেই রাজশাহীর পবায় পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা মধ্যচরে চলছে নতুন বসতি গড়ার সংগ্রাম।


পবা উপজেলার চরখিদিরপুরে পদ্মার ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত মঙ্গল ও বুধবার—দুই দিনে ১০৬টি পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে তাদের নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা নতুন চরে অস্থায়ী ভিত্তিতে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বুধবার ৬০টি পরিবারের মধ্যে কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।


চরখিদিরপুর এলাকা একেবারে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা। ভাঙনের কারণে পদ্মা নদী এখন ভারতীয় সীমান্তের অনেকটা কাছাকাছি চলে গেছে। এক বছর আগে ভাঙনের কারণে গ্রাম থেকে দুটি বিজিবি ক্যাম্প ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরিয়ে নেওয়া হয়।


বুধবার দুপুরে মধ্যচরে গিয়ে দেখা যায়, ৬০টি পরিবার চরে তাদের জায়গা বুঝে নিয়েছে। তারা খিদিরপুর থেকে নৌকায় করে তাদের ঘরের চালা খুলে নিয়ে আসছে। চরের নারী-পুরুষ-শিশু—সবাই নতুন করে ঘর তৈরির কাজে ব্যস্ত। এর মধ্যে শামসুল হক, কালাম উদ্দিন, আনসার আলী, লুৎফর রহমান, মাবিয়া বেগম, কাইমুদ্দিন মণ্ডল, সিদ্দিকুর রহমান, জোসের মোল্লা, কমর আলী ও মতি শেখ ঘর তৈরি করেছেন। অন্যরা নৌকা থেকে ঘরের চালা নামাচ্ছেন। কেউ নৌকায় করে চালা নিয়ে আসছেন। কেউ কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে চালার নিচে দুপুরের খাবার খাচ্ছেন।


নতুন ঘর তৈরিতে ব্যস্ত ব্যক্তিরা বলেন, কোনো উপায় না দেখে তাঁরা প্রথমে তাঁদের গ্রাম-সংলগ্ন ভারতীয় এলাকার মাঠে চালা ফেলে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁদের ওই এলাকায় চালা ফেলতে দেয়নি। বাধ্য হয়ে তাঁরা পদ্মা নদীর মধ্যচরে আসেন। এখানেও প্রথমে রাজশাহী মহানগর এলাকা থেকে লোকজন এসে এই জমি নিজেদের বলে দাবি করেন।


ইউএনও কায়ছারুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় জেগে ওঠা মধ্যচরের জমি সরকারের। কিছু লোক এই জমির মালিকানা দাবি করে বাধা দিতে এসেছিলেন। পরে প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নিয়ে বাস্তুহারাদের জন্য সেখানে জায়গা করা হয়েছে। প্রথমে ৬০ জন ও বুধবার আরও ৪৬টি পরিবার এসেছে। সবার জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। ৬০ পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। ৪৬ পরিবারের জন্য আরও এক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। দ্রুত তা বিতরণ করা হবে।


বুধবার দুপুরে চাল বিতরণের সময় ইউএনও ছাড়াও রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আতাউল গনি ও পবার হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

 

সৌজন্যেঃ প্রথম আলো

ছবি
ডাউনলোড